মহারাণী হেমন্তকুমারী ছাত্রাবাস

রাজশাহী কলেজ ই-আর্কাইভ থেকে

কলেজ লাইব্রেরির পশ্চিম পাশে পূর্বমুখী (বর্তমানে পশ্চিমমুখী) একতলা বিশিষ্ট এ ইমারতটি ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে পুঠিয়ার রাণী হেমন্তকুমারী দেবীর আর্থিক সহায়তায় ১৮,০০০/- টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়। এটি ছিল সংস্কৃত অধ্যয়নরত হিন্দু ছাত্রদের আবাসিক হোস্টেল যা এখনও বিদ্যমান। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা এ ইমারতটির কেন্দ্রস্থলে পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা একটি গলিপথ এবং গলিপথের উভয় দিক চারটি করে মোট আটটি কক্ষে বিভক্ত। কক্ষগুলোর সম্মুখে অর্থাৎ পূর্বদিকে একটি টানা বারান্দা রয়েছে। বারান্দাটি মোট তেরটি ত্রিভাঁজীয় খিলানে (ঃৎরভড়রষ ধৎপয) উন্মুক্ত (বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রবেশপথ ছাড়া বাকিগুলো গ্রীল দ্বারা আবদ্ধ)। সমগ্র ইমারতটির উপরিভাগ লোহা ও কাঠের তীর-বর্গায় নির্মিত সমতল ছাদে আচ্ছাদিত। বর্তমানে ইমারতটি পশ্চিমমুখী করে পশ্চিমাংশেও উত্তর-দক্ষিণে লম্বা স্বল্প আয়তন বিশিষ্ট একটি টানা বারান্দা সংযোজিত হয়েছে। এই বারান্দাটিও তেরটি অর্ধবৃত্তাকার খিলানে উন্মক্ত এবং খিলানের নিম্নাংশ স্বল্পোচ্চ প্রাচীর বেষ্টিত। ১৯৯৪ সালে এটি মেরামত ও সংস্কার করা হয়। সংস্কারের পূর্বে ইমারতটি ছাদপ্রান্ত রেলিং বিশিষ্ট বপ্র (নধষঁংঃৎধঃবফ ঢ়ধৎধঢ়বঃ) দ্বারা বেষ্টিত ছিল। ভবনটির পূর্ব বারান্দায় গলিপথের উত্তর পাশের দেয়ালে স্থাপিত শিলালিপি থেকে জানা যায় ছাত্রবাসটি বাংলার লেফটেনেন্ট গভর্ণর স্যার উডবার্ন কেসিএসআই কর্তৃক ১৬ জুলাই ১৯০১ সনে উদ্বোধন হয়। প্রথমদিকে আসন সংখ্যা ৫২টি হলেও ছাত্রদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৭০ করা হয়। কাল পরিক্রমায় ভবনটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়লে ১৯৯৪ সালে সংস্কার করা হয়। মহারাণী হেমন্তু কুমারী বোর্ডিং হাউসে বিদ্যমান শ্বেতফলক অনুসারে উদ্বোধন ১৯০১ সালে হলেও প্রতিষ্ঠাসাল হিসেবে ১৮৯৯ সাল মনে করা হয়। বোর্ডিং হাউসটির বর্তমান নাম মহারাণী হেমন্ত কুমারী হিন্দু ছাত্রাবাস। ছাত্রাবাসটিতে একটি ছোট মাঠ এবং মাঠের উত্তর-পূর্ব কোনায় একটি মন্দির আছে। কলেজে হিন্দু শিক্ষার্থীদের উপাসনার জন্য এটি একমাত্র মন্দির। এখানে স্বরস্বতী পুজা বেশ আড়ম্বরের সাথে পালিত হয়।

আরো দেখুন